Saturday, November 5

রফিকুল্লাহ্_কালবী ( বাংলাদেশ )



নিষিদ্ধ গলি


চাঁদাগাড়ার বিলে সন্ধ্যা নামে
নিজের ছায়াটি ধীরে ধীরে মিলে যায় আঁধারে,
কোথাও কোন আবছায়া নেই-
ঢোলকলমির ঝোপ থেকে বেরিয়ে আসা বনবিড়ালের জ্বলজ্বলে চোখ
ধ্রুবতারার গতিপথ ধরে হাঁটতে চায়,
সপাং করে গলির মোড়ের দোকানের ঝাঁপ পড়ে যায়-
আলগোছে নীরবতা নামে
থেমে যায় সব কোলাহল,
যে গলিটা নিষিদ্ধ, ওটাতে সন্তর্পণে ঘুরে আসি। 

প্রথমে ব্যথা ওঠে বুকের বামপাশটায়
তারপর মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ে পাঁজরময়,
কালী আঁধারের সাথে নিমেষে গ্রাস করে ফুসফুসের শিরা-উপশিরা,
মনে হয় কোন এক অপ্রয়োজনীয় অঙ্গ অজানা আঘাতে টনটন করে ওঠে
তাকে গলাটিপে হত্যা করার সাধ যায়,
তাকে একটানে ফেলে দিই শ্বাপদ জানোয়ারের মুখে। 

ট্রমা সেন্টারে যাই,
দেশবিদেশ থেকে অর্জন করা ডাক্তারের কতো রকমের ডিগ্রী!
চেম্বারের বাইরে নেমপ্লেটে যত্ন করে লেখা,
প্রথমেই জানতে চায়- সিগারেট বা এটা-সেটার অভ্যাস আছে কি না?
অভয় দিয়ে বলি, নেশা বলতে দিনে দু'চার কাপ কড়া লিকারের চা,
আর আঁধার নামলে নিষিদ্ধ গলিটার কথা বলতে গিয়ে থেমে যাই।
ব্যবস্থাপত্রে কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার নাম ওঠে-
ইউরিন, ইসিজি, সিবিসি, এক্স-রে এবং আল্ট্রাসনোগ্রাফি। 

পাওয়ারের চশমা সেঁটে ডাক্তারবাবু রিপোর্ট দেখেন
ইসিজি এ্যাবনরমাল, আর সবকিছু নেগেটিভ। 
তবে ইসিজির আঁকাবাঁকা রেখার কোথাও কোন নিষিধ গলি নেই,
হোল এ্যাবডোমেন আল্ট্রাসনোগ্রাফির কোথাও কোন নিষিদ্ধ গলি নেই,
এমনকি এক্স-রের ডিজিটাল ফিল্ম জুড়ে কোথাও কোন নিষিদ্ধ গলি নেই,
ডাক্তারের কপালে জ্যোতিষীর মতো ভাঁজ পড়ে!
কিন্তু আমি তো জানি, আমার একটি নিষিদ্ধ গলি আছে
দিনের সব কোলাহল বন্ধ হবার পর
সন্তর্পণে ঐ গলিপথ আমাকে একবার ঘুরে আসতে হয়। 

No comments:

Post a Comment

লেখা পড়ুন এবং মতামত জানান ।