Friday, September 30

আমিও তো মানুষ

দ্বীপ সরকার
বস্তা বস্তা নীল, কষ্টদের মিমাংসিত
অধ্যায়ের চিঠি পড়ে থাকে হলুদ খামে,
কেউ ছুঁয়েও দেখেনি বলে
বিভৎস দেখে ছায়াহীন রোদ,
ওপাশে পুরনো কষ্টের চাকু উন্মুখ থাকে,
কেটেকুটে পার হওয়া চাকু কখনো
আত্নীয় হতে পারেনা।
তবু সহ্যের আলোয় নিজেকে বিকশিত করি।
আমি আকাশ। চারপাশ দুরন্ত নীল।

Friday, September 23

বন্ধ দুয়ার


শ্রাবণ আহমেদ হিমু
------------------
যদি কখনও দেখ কুয়াশা ঝরা দুর্বা ঘাস, 
ভেবে নিও সেথায় আমি ছিলাম মাড়িয়ে যেও।
যদি সূর্য তেজদীপ্ত হয় ছিটানো আলোর ঐশ্বর্যে, তবে -
ভেবে নিও সেথায় আমি ছিলাম নিজেকে আড়াল করে নিও। 
যদি আকাশ ভাঙ্গা বৃষ্টি নামে মুষলধারে
ভেবে আমায় কোন ছাঁদের তলায় নিজেকে আশ্রয় দিও।
কোন পূর্ণিমার রাতে যদি জোৎস্নার রূপালী আলো ঝলসে দেয় তোমার আঙিনা -
ভেবে আমায় জানালা করে দিও বন্ধ।
পাহাড়ী বাতায়নে অপার সবুজ যদি হঠাৎ দেখ অবাক করা,
ভেবে আমায় বন্ধ আঁখি চেপে নিজেকেই বলো তুমি অন্ধ।
ক্ষরস্রোতা নদীর প্রবাহ যদি দেখ অনেক উত্তাল 
ভেবে আমায় সরে যেও সীমানার ওপারে অনেক দূরে।
ঝরণা’র অববাহিকার অরূপ মোহে যদি পড়ে যাও
ভেবে আমায় যাও পথ পরিবর্তনে দিকে’র মোড়ে।
ঘাসে ঢাকা মেঠোপথ যদি ভাল লাগে হঠাৎ -
ভেবে আমায় মাড়িয়ে যাও সে পথ পদতলে।
আকাশের নীল শুন্যতা দেখে যদি মুগ্ধ হও 
ভেবে আমায় ডুবে যাও আপন মনের অতলে।

Wednesday, September 21

কাঁচের মেয়ে

ইতি সামিয়া

আমার বিয়ে হয়েছিলো মাঘ মাসের উনিশ তারিখে, সেদিন আমি প্রতিদিনের মতই স্কুলে গিয়েছিলাম ক্লাস নিতে, পড়াশোনা ইন্টারের পর আর হয়নি, অভাব অনটনে আর বখাটেদের উৎপাতে সেটা ছেড়ে দিয়েছিলাম তখন প্রায় পাঁচ বছর। আমি ছিলাম প্রাইমেরি স্কুল শিক্ষক। সেদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর মা বাবা ছোট ভাই বোনের মুখে শুনলাম যে ওই দিনই আমার বিয়ে। বর পক্ষ ঢাকা থেকে রওয়ানা দিয়েছে সন্ধার আগেই পৌঁছে যাবে।
বাবা বলল ছেলে ভালো শহরে থাকে নিজের ফ্যাক্টরি  আছে তুলার না কিসের যেন। বাবা নিজেও জানেনা ছেলে ঢাকা কোথায় থাকে কি করে কিংবা কীসের ফ্যাক্টরি, অথচ তার মেয়েকে তার হাতে বিনা দ্বিধায় তুলে দিতে যাচ্ছে সারাজীবনের জন্য।
আমি একটু মিন মিন করে প্রতিবাদ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু মায়ের অসহায় দুঃখী চেহারাটা আমায় বাধ্য করলো অন্যায় মেনে নিতে। বিয়ের রাতে দেখলাম সে মোটেও ছেলে নয় বছর পঞ্চাশ তো হবেই বয়স। ভাসা ভাসা এও কানে এলো আগে আরও দুইটা বিয়ে তার, তারা তাকে ফেলে কোথায় নাকি চলে গেছে। তাদের মতে খারাপ মেয়েমানুষ ছিল তারা। কোন ছেলেমেয়েও তাদের হয়নি।
সে আমার বয়সে দিগুণ এবং বড্ড কুৎসিত ব্যবহার ঠিক যেমন সে দেখতে, আমি চোখ মুখ বুজে সমাজের নিয়মের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে লাগলাম।
এসবের মাঝেই নিজেকে সুখি করার কি যে অদম্য চেষ্টা আমার। আমি এই কুৎসিত লোকের সাথেই দিন দেখি রাত দেখি বাইরে বের হই আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাই।
এইরকম ভাবেই বছর দুই কেটে গেলো আমার কোল আলো করে এলো আমার প্রথম সন্তান। কিন্তু সে মেয়ে বলে স্বামী শশুর শাশুড়ির কাছ থেকে প্রতিদিন শুনতে হচ্ছে অবর্ণনীয় গালি গালাজ, কেননা তাদের বংশের প্রদীপ দেয়ার জন্য ছেলে সন্তান চাই-ই চাই। মেয়ে কোন মানুষের পর্যায়ে পড়ে নাকি!! এভাবে আরও একটা বছর কেটে গেলো, আমার গর্ভে আর সন্তান কেন এখনও আসছেনা তাই তাদের অত্যাচার বেড়েই চলল। আমি কেবল দাঁত মুখ চেপে সহ্য করতে থাকলাম যন্ত্রনা।  
এমনি এক সময়ে একদিন এক অদ্ভুত 
মেয়েকে দেখলাম। মেয়েটিকে আমি একবার দেখলে হয়ত অত মাথা ঘামাতাম না। কিন্তু পরপর অনেকবার দেখা হওয়ায় ব্যাপারটা আমায় ভাবাচ্ছে।

আমি মেয়েটিকে প্রথম দেখেছিলাম শপিংমলে সে হেসে হেসে ২টা মেয়ের সাথে খুব জমিয়ে গল্প করছিলো, কেউ বলে না দিলেও বোঝা যায় ওই ২টা মেয়ের মধ্যে সেই বস। ওর কথার উপরে একটা কথা বলার সাহস মনে হয় না মেয়েগুলোর মধ্যে কারো কখনো হয়েছে।
মেয়েটিকে রূপবতী বললে ভুল বলা হবে, মেয়েটি যেন তুলনার ও উর্ধে, ওর স্বচ্ছ কাঁচের মতন ত্বক অদ্ভুত তেজী চোখ স্বাভাবিক ভাবেই ভীষণ রকম আলাদা করে ফেলে সবার থেকে।
আমি একটা মেয়ে হয়েও বার বার ঘুরে ঘুরে মেয়েটিকে দেখছিলাম কারন, হয়ত কখনো নিজেকে ওর মতই ভাবতাম কিংবা এই রকম একটা মেয়ে হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম।  
মেয়েটা আমার দিকে একবারও তাকায়নি তবু যতবার আমি ওর দিকে তাকাচ্ছিলাম একটু অজানা অস্বস্তিতে চোখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছিলাম, কেনোনা আমার ভীষণ রকম  মনে হচ্ছিলো মেয়েটি এত দূর থেকেও আমার ভেতরটা পড়ে ফেলতে পারছে, ওর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ওকি আমার দিকে চেয়ে ঈষৎ হাসলো!! কি জানি! 
আমার সাথে আমার দিগুন বয়সের কুৎসিত স্বামী বিকট শব্দ করে নাক দিয়ে গোৎ গোৎ শব্দ করতে করতে আমার পিঠে হাত রাখতে রাখতে বলল খানকী মাগী এদিক ওইদিক কি দেখোস আরও বিয়া বসার শখ হইছে নাকি? জামাই খুঁজোস? আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম! আশেপাশের মানুষ কি শুনতে পেয়েছে কিছু!!!

মেয়েটিকে আরেকদিন দেখলাম ফাল্গুন বাসে, গাড়িতে উঠেই দেখলাম সে সামনের দুই সারি পরেই বসা, সাথে ওই মেয়ে দুইটিও, একি রকম মেয়েটি আমার দিকে তাকাচ্ছে না, যদিও মনে হচ্ছিলো ও আমাকে দেখছে, আমার স্বামী জানালার পাশে বসেছিলো কেনোনা বাসে উঠলেই সে বাঁধ ভাঙ্গা বানের জলের মত হরহর করে বমি করতেই থাকে, এত বমি কি করে যে আসে কে জানে, সেদিনও একই ঘটনা, বাসে উঠেই সে তার বিখ্যাত বমি করা শুরু করলো, মেয়েটি আমাকে দেখছে না কিন্তু আমার কেন মনে হচ্ছে যে ও আমার দিকেই চেয়ে আছে!! এবং এই যে আমি যন্ত্রনায় লজ্জায় একদম মরে যাচ্ছি ও যেন তা বইয়ের পাতার মত পড়ে ফেলতে পারছে। 
আমার দিগুন বয়সের স্বামী বমি করেই যাচ্ছে দুই এক সেকেন্ডের জন্য আমার দিকে ফিরে কুৎসিত হাসি হাসছে, একবার বলল মাগী পানি দে পানি নিয়া আসোস নাই!! আমার ইচ্ছে হচ্ছিলো বাসের জানালা দিয়ে বাইরে ঝাঁপিয়ে পরে পালিয়ে যেতে। আমার  বাচ্চা মেয়েটি সেদিনই আমাদের সাথে প্রথম বাসে চড়েছে , সে তার বাবার এই রুপের সাথে পরিচিত নয়, বার বার আমাকে বলছিল মা মা বাবা বোধহয় মরে যাচ্ছে। বাবা বোধহয় মরে যাচ্ছে। 
সত্যি সত্যি যদি মরে যেত!!
মেয়েটিকে তৃতীয়বার দেখেছিলাম গুলশান লেকের পাড়ে। সাথে ওই দুই বান্ধবী। প্রথমে তাকে চিনতে পারছিলাম না, সে দিনের আলোয় আরও ঐশ্বরিক রুপে যেন ঝকঝক করছিলো। কাঁচের মেয়ে;  মনে মনে বললাম। আমার স্বামী গেছে সামনের এক ঝোপে  প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে, রাস্তায় বের হলেই ঘন ঘন প্রকৃতি তাকে ডাকে। আমার ধারনা তার ডায়াবেটিস আছে। ঝোপ থেকে বের হয়ে এসে বলল বেশ্যা নিয়া সংসার করি কোথাও গেলে কত যে জ্বালা! এসব নিয়ে রাস্তা ঘাটে চলা যায়! লজ্জায় ঘৃণায় আমার চোখ ভরে এলো টপ টপ করে পড়তে লাগলো গাল বেয়ে, সারাক্ষন এসবই শুনতে হয় তবু কেন যে এত কষ্ট লাগে! 

আমি মেয়েটিকে চতুর্থ বারের মত দেখেছিলাম! অবশ্য ওটা ছিল চতুর্থ এবং শেষবারের মত দেখা। এরপর মেয়েটিকে আর কখনো দেখিনি। যদিও আমি মনে প্রানে চাই মেয়েটির সাথে আমার আর একবার দেখা হোক। ওকে একটু জড়িয়ে ধরে কাঁদার জন্য হলেও আর একবার দেখা হোক।
সেদিন ছিল পূর্ণিমার রাত, আকাশে রূপালী রঙের ঝকমকে চাঁদ উঠেছে। দিনের আলোর মত স্বচ্ছ সব। আমি আমার শশুর বাড়ির চারতলার ছাঁদে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছিলাম। সব কিছু এত পরিস্কার!! আমার শ্বশুর বাড়ির সামনে দিয়ে যে মেঠো পথ এঁকেবেঁকে একবারে নালায় যেয়ে মিশেছে সেই পর্যন্ত সব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো, এমনি কোন এক সময় উনারা এলো  ঠিক আমার পেছনে, যেই না আমি ঘাড় ঘুরাতে যাব এমনি সময় তাদের একজন পেছন থেকে আমার চুলের মুঠি খামচে ধরলো, চুলের মুঠি সম্ভবত আমার স্বামী  ধরেছিলো কেনোনা পেছন থেকেও আমি তার মুখের কড়া ওই গ্যাসটিকের পঁচা গন্ধ পাচ্ছিলাম। আমি ধরে নিয়েছিলাম ওটা আমার জীবনের শেষ মুহূর্ত।
পেছন থেকে উঁচু করে খুবি দ্রুতগতিতে ধাক্কা দিলো কেউ আমাকে।
আমি নীচে পড়ে গেলাম না। পড়ে যেতে যেতে  অনুভব করেছিলাম আমি স্থির হয়ে আছি, বাতাসের উপর ভাসছি।
আর খুব মমতা নিয়ে সেই কাঁচের মেয়েটি আমার  মুখের দিকে ঝুঁকে আছে, হায় তার দুই চোখ দিয়ে কি দুই ফোঁটা কাঁচের জল গড়িয়ে পড়লো। এত রাতে সে কি করে এলো এখানে!

এরপর কত কিছু হয়ে গেলো আমার আর কিছুই মনে পড়েনা।
আমি আমার মেয়েটিকে নিয়ে এখনও বেঁচে আছি, সে এবার একুশ বছরে পা দিবে। মাঝে মাঝে তার চেহারা কাঁচের মত ঝকমক করে ওঠে আর আমি ভেতরে ভেতরে ভীষণ চমকে যাই।

Tuesday, September 20

এভাবে সমাজ পরিবর্তন হোক

ফেসবুক সংগ্রহ

কি নির্মম দৃশ্য ♡ মেয়ে মাকে শেষ বিদায় দিচ্ছে চুমু দিয়ে

ফেসবুক সংগ্রহ


চার বছর বয়সী ছোট্ট মেয়ে তার মাকে চিরদিনের জন্য বিদায় জানাচ্ছে!! আর কখনো মায়ের মুখ দেখা হবেনা। মায়ের মলিন হাতের স্পর্শ বা আদর স্নেহ পাবেনা! মায়ের মধুমাখা কন্ঠস্বর শুনতে পাবেনা! বিষয়টি ভাবতে খুব কষ্ট হচ্ছে, শুনেছি তার ৪দিনের আরো ১টি কন্যাসন্তান রয়েছে! অকালে মা হারানো হতভাগ্য শিশুরা সৃষ্টিকর্তার কৃপা লাভ করে সুখে শান্তিতে থাকুক। ছবিটি মর্মস্পর্শী ও হৃদয়বিদারক!!

Saturday, September 17

রবি কথা

ফেসবুক সংগ্রহ

বাণী

ফেসবুক সংগ্রহ

Friday, September 16

দুঃখ পেলেই মরে যেতে হবে না

আনিসুর রহমান


তোমার কী খুব দুঃখ?

না ?

তবে কাঁদছো কেনো  ? যেন পৃথিবীর সব তারা  নিভে গেছে ,

তবে জীবনকে কেনো ঝুলাতে গিয়েছিলেঅতৃপ্তির যুপকাষ্ঠে?

যদি দুঃখ পেয়ে থাকো, ধারণ করো, সমুদ্র যেমন ধারণ করে বিক্ষুদ্ধ, বিষাদ জলরাশিকে।

দুঃখ পেলেই মরে যেতে হবে না,

যদি তা না হতো তবে কবেই ঘটাতাম জীবনের নির্মম পরিসমাপ্তি।

তুচ্ছ হয়ে বেঁচে থেকে, হৃদয়ে রক্তক্ষরনে বুঝেছি কতটা বেঁচে নেই।

কতবার মরে গেছি স্বপ্নে, আকাশ থেকে ঝরে পড়ে, আতংকে জেগে উঠেছি

বাঁচার আনন্দে, চিৎকারে, আন্দোলিত হয়ে, তেমনি তুমিও বাঁচবে, তোমাকে বাঁচতেই হবে।

একটি সূর্য নিভে গেলে, লক্ষ তারা জ্বলে ওঠে

তেমনি তোমাকেও জ্বলে উঠতে হবে, নিভে যেতে হবেনা।

 

নক্ষত্রের সন্তানেরা,

হতাশায় মরে যেওনা, কাঊকে মরে যেতে দিওনা

দুঃখ পেওনা, কাউকে দুঃখ দিওনা, বিদীর্ন হয়োনা, দুঃখকেই বিদীর্ন করো,

শোকে ডুবে যেওনা, ভেসে ওঠো আনন্দের শিহরনে জীবনের অন্যকুলে অন্য জনমে।

সময়ের চোরাবালিতে স্বপ্ন হারিয়ে গেলে, তবুও কাঁদতে হবে না,

পাতার শিশিরের মতো ঝরে যেতে হবে না।

খুঁড়িয়ে চলা জীবনকেও মাঝপথে থামাতে হবেনা। 

 

আমি বিশ্বাস করি,

আত্মগ্লানিতে জর্জরিত হয়ে তবু এগিয়ে চলা জীবনের গর্বিত মহাকাব্য রচনা করে।  

আত্মসম্মানবোধ জীবনের শ্রেষ্ঠত্বের সামনে নতমুখে হেঁটে যায়। 

রাত্রি যেমন দিনের উজ্জলতার কাছে হেরে যায়, তবু নিজের কাছে কেউ পরাজিত নয়।

বিশ্বাস করি,

মানুষ বাঁচবে সম্ভাবনার সূর্যকে স্পর্শ করার সাহস নিয়ে,

হৃদকম্পে জীর্ন ভবনের মতো ধ্বসে যেতে হবে না।

বেঁচে থাকতে হবে একটি সত্য সূর্যমুখীর মতো।

জীবনের কাছে হার মেনে, আঁচলে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে হবেনা ।

 

পৃথিবীর পাপী ও নিষ্পাপ সন্তানেরা,

প্রতিশোধে বিষাক্ত প্রেম ছুঁড়ে ফেলে দাও,

দান করো উম্মুক্ত ভালোবাসা চন্দ্রালোকের মতো, নিঃস্বার্থ, প্রতিদানহীন ।

কি দিয়ে কি পেলাম এমন তো নয়…..

প্রকৃত প্রেমিক কি কখনো খুজেঁ পায় তার প্রেমিকাকে ?

তবে  কেন সবুজ জোত্স্নার স্বপ্নে বিভোর অরণ্য রোদনে ?

প্রেম কি কখনো মুখরিত মিছিলের স্লোগানে ?

পুঞ্জিভূত ক্ষোভ কেরোসিনের আগুনে পুড়িয়ে নিজেকে দগ্ধ করে

বিবর্ণ আত্মা কি মুক্তি পায় ?

 

 

অবিনশ্বর প্রেমকে সন্ধিপত্রে বন্দী করনা।

আইনের বেড়াজালে মুর্খ জনপদ বন্দী করে ভালোবাসার শ্বেতকপোত।  

সন্ধিবিচ্ছেদ হলে হোক, জ্বলেপুড়ে নিঃশেষ হতে হবে না।

পরিনয়সূত্রে আবদ্ধ হতে না পারলেও জীবনের সাথে বিচ্ছেদ ঘটাতে হবেনা।

প্রেমে পুড়ে এসিডে ঝলসাতে হবেনা সৌকর্যের প্রতিমা।

বেদনার বিষবাস্প দুর্দমনীয় হলে হোক,নিজেকে বিস্ফোরিত হতে হবেনা।

বরং প্রশান্ত হও বৈকাল হ্রদের স্বছ জলের মতো, এবং ক্ষমা করো পাপীকে।

যে তোমাকে পথে ফেলে গেছে, তাকে পদদলিত করে শুরু হোক এক উচ্ছসিত নবযাত্রা। 

 

অসম্ভবের দিনগুলোতে স্নিগ্ধ স্বর্নালী এক ভোরে

জঠর পেরিয়ে জণ্ম নেবে এক চিলতে শিশু...

যেন সবুজ পাতায় ঝুলে থাকা কিঞ্চিত রৌদ্রালোক.

বেঁচে থাকবে নতুন প্রজন্মে, সন্তানের নতুন স্বপ্নের নীলিমায়,

প্রিয় সন্তানকে স্নেহের আলিঙ্গন থেকে বঞ্চিত করতে হবেনা। 

 

ক্ষণজন্মা এই জীবনে, তাই বঞ্চিত করো না, কষ্ট দিওনা,

নিস্পাপকে নষ্ট করোনা, স্বেচ্ছামৃত্যুকেমেনে নিও না,

এ পাপের ক্ষমা পাবে না, কখনো পাবে না।

তাই বাঁচতেই হবে, মৃতস্রোত কিংবা কীটপতঙ্গের মতো হলেও,

নিজেকে বিশ্বাস করো, তুমি অদ্বিতীয়,তোমাকে পারতেই হবে, আত্মহনন করতে হবেনা।

সমস্যাসংকুল জীবনের সমাধান মৃত্যুতে খুঁজতে হবেনা....

তাই আজ থেকে - দুঃখ পেলেই মরে যেতে হবেনা,

পৃথিবী তোমাকে চায়, পৃথিবীকে ছেড়ে যেতে হবেনা ।

 

Thursday, September 15

কিডনি নষ্ট থেকে বাঁচুন

ফেসবুক থেকে সংগ্রহ

ফেসবুক সংগ্রহ

আগমনি

মাসুম খান

মহামায়া মহাকালী
আদ্যাশক্তি মুখে বলি
জয় মা তোমার, জয় হোক
এবার, মহিষাসুর পদতলে।।

মা, পরমপুরুষ সঙ্গী তোমার
তুমি পরম প্রকৃতি
পরম সৃষ্টির কারণ তুমি
তুমি ধ্বংসধারিনী।।

মেনকা গর্ভজাত তুমি
মেনকারও জননী
গিরিধারীর কন্যাতুমি
তারও গর্ভধারিনী।।

সিংহ পিঠে সিংহাসনী
হিংস্র তুমি, হিংসানাশিনী
আমার ’পরে করূণা তোমার
ভক্তি লহ চরণ তলে।।

অসীম শক্তি তোমার মাঝে
ব্রহ্মা-বিষ্ণু লুটায় পদে
রাজ্যহারা হয়ে ইন্দ্র
তোমার স্মরণ লয় সে এসে।।

হিমালয়ের শিখর দেশে
পার্বতী নাম লয়ে হেসে
সুখে আসো আপন বেশে
কালকেটে যায় কালের দোষে।।

ইন্দ্র আবার রাজ্যহারা
ঘুরে পথে পাগল বেশে
টুটি টিপে ধরেছে মাগো
প্রাণ চলে যায় শক্তিনাশে।।

মাগো, শূম্ভনিশূম্ব আর মধুকৈটভ
এসেছে আবার ধরার মাঝে
মহিষাসুর তাদের মাঝে
ঐ দেখা যায় দেখনা চেয়ে।।

তুই যদি মা এমনি করে
কাটাস সুখে গিরিপরে
ডাকবো না আর মা মা বলে
মরবো দেখিস অসুরশক্তির পায়ের তলে।।

গুচ্ছকবিতা

"সন্যাসিনী"
রায়হান মুশফিক
※※※※※※※※※※※

যার কথা বলছি তিনি কোন কর্পোরেট সন্যাসিনী নন
সম্মোহনের জালে জড়াতে পারেন যে কাউকে;
যখন তখন।
প্রাকৃতিক ভাবেই সম্মোহনী শক্তির অধিকারিণী,
নিজের অজান্তে।
আমি তাঁর মায়াজালের শিকার;
শিষ্য বললেও ভুল হবে না।
আমি সম্মোহিত হয়েছি তাঁর কথায়, বুদ্ধির তীক্ষ্ণতায়।
স্বর্গীয় গান, তাঁর হাসিতে
ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়।
তাঁর মায়ায়, ইশারায়, না বলা অনেক কথায়-
সর্বোপরি তাঁর সমস্ত সত্তায়।
কখনো ভাল সে বাসেনি আমায়
শিষ্যকে ভালবাসা বেমানান;
যদিও বিপরীত ব্যাপারটা স্বাভাবিক।
তবু যেন কত
অনুভব করি!
যেমন সে বোঝে-
তাঁরে কত ভালবাসি।
তাঁর আছে সমুদ্রপাড়ের অবারিত প্রন্তর-
অাছে চোরাবালি,
হাঁটতে থাকি সম্মোহনে
চোরাবালিতে পড়েছি;
যতই দিন যায় আমি তলাতে থাকি।
কার বা সাধ্যি আছে বের হয়ে আসে,
উনি যে প্রকৃতির সন্যাসিনী।

"লাশ"

※※※※※※※※※※

এই যে ভিতরে আসুন!
গন্ধটা খুবই পরিচিত; কর্পূরের।
আগরবাতি জ্বলছে
ঘরের ভিতরটা মায়াময় আবহাওয়া;
ভয়ের কিছু নেই
সাদা কাফনে মোড়া উনি একজন মানুষ।
এখন অবশ্য ওনাকে মানুষ বললে অনেকে বুঝবে না;
লাশ ই বুঝি এখন সবচেয়ে ভালো পরিচয়।
দুদিন আগেও মানুষ হিসেবে সম্মানের ভার ছিল;
এখন তাঁর বাড়ি 'মরা বাড়ি'
আর তিনি শব।
আত্মার অনুপস্থিতিই সব?
লাশ আর মানুষ;
পার্থক্যে থাকে না কারো কাজ, জীবনাচরণ, বিগতদিন।
একি! আপনি কি কর্পূরের গন্ধে সম্মোহিত?
আগরবাতির ধোঁয়া শরীরের রন্ধ্রে ঢুকেছে;
ব্যাপনে?
সাদা কাপড়ের মাঝে নিজেকে লাশ মনে হচ্ছে?
ফিরে আসুন;
খুব বেশি সময় নেই।
লাশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাফন করা ভালো।

"অস্বিত্বে তুমি"

※※※※※※※※※

কবিতায় আর কি লিখব,
যখন সারাটা কবিতা জুড়ে তোমার অস্তিত্ব!
তোমার অস্বিত্বের সাদা প্রস্তর ভরে উঠে
আমার বলপয়েন্টের কালো নিবে,
তুমি হয়ে ওঠো আমার কবিতা!

আমার অস্তিত্বও মিশিয়ে দেই কবিতার অক্ষরের সহজ প্যাঁচে
কত দুর্বোধ্য শব্দ তরল হয়ে ওঠে;
অস্বিত্বে অস্বিত্বে বিলীন হয়
কালি হয়ে হারিয়ে যাই দু'জনেই,
কবিতা হয়ে যায় আমাদের সর্বস্ব
কি সৌখিন সহজ ভাবে তুমি কবিতা গেল!

লিখে যাই
যতক্ষণ শেষ কলমের নিব বুঝতে পারে;
সেও সাদা হতে চলেছে কাগজের মত।

প্রেরণা দত্তের আঁকা ছবি

ফুটপাতের পতঙ্গ

গোপেশ দে

শাঁ শাঁ গাড়ির শব্দে এলোমেলো মাথার
কার্যকলাপ।
শরীরের ভেতরে যন্ত্রণার অবগাহনে লোমকূপ দাঁড়াতে ভুলে না।
দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়ে থাকে....
ছুঁচোর ডন জঠরের মধ্যে।
জীবনের ম্যাজিক সময় ওদের হাতের তালুতে।
রাত নেমে তাঁরা আলো হয়ে মিটমিট জ্বলে,
চাঁদের ডিউটি চলে কবিদের সাথে,প্রেমিকের ন্যাকা কথা সেলফোন সঙ্গী হয়ে জোৎস্নার ডিএনএ মেখে ডিম্বাণু উত্তপ্ত করে চলে....
সব চলে।
হ্যান্ডিক্যাপড অসার দেহের সংসার বঞ্চিত
পতঙ্গের কান্নায় সাহস জোগানোর ডিউটি আসেনা।
ওখানেতে কাব্যচর্চায় জাগ্রত চাঁদ, উঠোন জুড়ে চাঁদের কবিতার রেশন ভাগ করে খায়
আয়েশী আবেগী টোনাটুনি কিংবা টম এন্ড জেরি
আর কিছু অন্যধরনের পতঙ্গের কংকাল ফুটপাতে ভেংচি কাটে,
বসে চাটে মাটি,
কুকুরের সাথে রুটি ভাগ।
জিহ্বায় রসনাবিদ্বেষী ক্ষিধে।
কাব্যচর্চা চলেনা এখানে
জীবনটাই তো নস্টালজিক মিছে আশা,ড্রিল মেশিনের ফুটো শরীরে।
অন্য এক জীবনের শরবত খায় তারা
ফুটপাতসঙ্গী পায়
জীবনমুখী শিল্পীরা গান গায়।
পুরুষাঙ্গ নিষ্পাপ তবু
আকাশের পানে চেয়ে থাকে।

মঙ্গল কাব্যের সামাজিক মূল্য





মাসুম খান

বাংলাদেশের গ্রামীণ জনজীবনের সঙ্গে মঙ্গলকাব্য উৎপত্ত ভাবে জড়িয়ে আছে। এই মঙ্গল কাব্যগুলি বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাসে ড. আশুতোষ ভট্টাচার্য