Monday, October 17

ফেসবুক ঈক্ষণ



প্রয়াণ দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধা। 



লালন ফকিরের বয়স তখন ১১৬ বছর। তিনি শিষ্যদের ডেকে বললেন, এই আশ্বিন মাসের শেষের দিকে তোমরা কোথাও যেওনা। কারণ পহেলা কার্তিকে গজব হবে। বিষয়টি শিষ্যরা অনুমান করতে না পারলেও আসন্ন বিপদের আশংকা করতে লাগলো।
মৃত্যুর প্রায় একমাস আগে তার পেটের ব্যারাম হয়, হাত পায়ের গ্রন্থিতে পানি জমে। পীড়িতকালেও তিনি পরমেশ্বরের নাম সাধন করতেন, মধ্যে মধ্যে গানে উন্মত্ত হতেন। ধর্মের আলাপ পেলে নববলে বলিয়ান হয়ে রোগের যাতনা ভুলে যেতেন।
এসময় দুধ ভিন্ন অন্য কিছু খেতেন না তবে ইলিশ মাছ খেতে চাইলে শিষ্যরা বাজার থেকে ইলিশ মাছ নিয়ে আসে। দুপুরে সাধন ঘরের সামনে সামিয়ানা টাঙ্গিয়ে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়। বিকেল থেকে শুরু করে সারারাত লালন তাঁর শিষ্যদের শ্বাশ্বত বাণী শোনা, মাঝে মাঝে গাওয়া হয় তাঁর গান। রাতে আলোচনা শেষ করে লালন সাধন ঘরে ফিরে গেলেন বিশ্রাম নিতে। শিষ্যদের বললেন, আমি চললাম।
লালন চাদর মুড়ি দিয়ে বিশ্রাম নিলেন, শিষ্যরা মেঝেতে বসে থাকলেন। এক সময় লালন কপালের চাদর সরিয়ে বললেন, তোমাদের আমি শেষ গান শোনাবো। লালন গান ধরলেন, গভীর অপরূপ সুন্দর গান-
পার কর হে দয়াল চাঁদ আমারে।
ক্ষম হে অপরাধ আমার
এই ভবকারাগারে।
গান শেষ হলো, চাদর মুড়ি দিয়ে চিরদিনের জন্য নিরব হয়ে গেলেন ফকির লালন। ফকির লালনের জন্ম সাল জানা যায়নি, তিনি পহেলা কার্তিক ১২৯৭ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১৭ অক্টোবর ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে মারা যান এবং তিনি বেঁচে ছিলেন ১১৬ বছর।

No comments:

Post a Comment

লেখা পড়ুন এবং মতামত জানান ।