Monday, October 17

রামচন্দ্র সরকার ( বাংলাদেশ )


।।ভাষা।।

ভাষা হলো -শব্দের সাহায্যে ভাবের অভিব্যক্তি বা কল্পরচিত ইচ্ছা প্রকাশের মাধ্যম।

ব্যকরণের ভাষায়-যে ধ্বনি মানুষের বাগযন্ত্রের সাহায্যে গঠিত হয় এবং যার দ্বারা মনের আবেগ -অনুভূতি অথবা মুখ গহ্বর থেকে তৈরিকৃত অর্থবোধক শব্দ সংকেতের সাহায্যে  একে-অপরের সাথে মনের ভাব বিনিময় করা হয় তাকেই ভাষা বলে।
মানুষ যখন কথা বলতে শেখেনি -তখন মানুষ চিত্রকলা,সংকেত, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ভাজ-ভঙ্গিমার মাধ্যমে মনের চাহিদা মেটাতো, এবং ক্রমে-ক্রমে -ক্রমান্নয়ে ও বিবর্তনের ধারাবাহিকতার পথ অনুসরণ করে কথা বলতে শেখে।

ঈশ্বর এই বিশাল বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করে যেমন অনন্য প্রসংশার উচচতম শিখরে উঠেছেন ঠিক মানুষও  সভ্যতার সূচনালগ্নে আগুন ও চাকা আবিষ্কার থেকে শুরু করে আজ অবধি  শহর -বন্দর,সুখ-সাচ্ছন্দের সাজসরঞ্জাম, উড়োজাহাজ, মোবাইল, ইন্টারনেট, ফেসবুক এবং বিভিন্ন ধরনের অদ্ভূত আবিষ্কারের ভিতরে ভাষাও মানুষের অবিশ্বাস্য আবিষ্কার এবং শক্তিশালী মস্তিষ্ক বুদ্ধিসম্পুন্ন প্রতিভার পরিচয়।

আর এই জন্য মানুষ অন্যসব প্রাণীদের চেয়ে অন্য রকমের।
এমন একদিন ছিল যখন মানুষের মধ্যে ভাবের বা ইচ্ছা প্রকাশের মাধ্যম ছিল নানা রকম ঈশারা এবং এর মাধ্যমেই মনের ভাব আদান-প্রদান করতো।

চার্লস ডারউইন বলেছেন, 'এতে কোন সন্দেহ নেই যে ভাষার উৎপত্তি হয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শব্দের ঈঙ্গিতে, প্রাণীদের আওয়াজ ও মানুষের ভাষাগত উচ্চারিত ধ্বণির অনুসরণ ও সংশোধন  করে''
ভাষা হলো -মানুষের এমনই একটি মানসিক প্রক্রিয়া যা কন্ঠনালী,কন্ঠ, জিহবা,দন্ত,তালু, ওষ্ঠ এবং ইত্যাদি থেকে প্রসূত ও এইগুলি থেকেই ধবণির সৃষ্টি এবং অর্থবহ হয়ে মুখ থেকে বেড়িয়ে আসে।

ভাষার ঐশ্বর্য্যময় সম্ভার হচ্ছে শব্দ ও শব্দের পরে শব্দ বসে হয় ভাষার সৃষ্টি।
মুখ-গহ্বর থেকে সৃষ্ট ধ্বণির চিহ্ন তৈরির দ্বারা কন্ঠনি:সৃত ধ্বণির লিখিত রূপ আজকের এই কাগজের পাতায়। স্থান-কাল পাত্রভেদে বিভিন্ন সম্প্রদায়,গোষ্ঠির ও দল-মতের ভাষার রুপ ভেদ হয়ে থাকে,এই জন্যই পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার ভাষা বিভিন্ন রকমের।

ভাষা কবে থেকে শুরু হয়েছে এর প্রকৃত ইতিহাস খুজে দেখতে হলে আমাদের অন্তত ৫০ হাজার বৎসর পেছনে ফিরে যেতে হবে। 'কত-কত ভাষাবিজ্ঞানি মনে করেন ভাষার ইতিহাস আসলে এর চেয়েও পুরনো'বলেছেন নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভাষাবিজ্ঞানী ম্যাগি টলারম্যান । অবশ্য অনেক ভাষাবিজ্ঞানীদের অভিমত-লক্ষ-লক্ষ বৎসর পুর্বে মানুষ ভাষা শিখেছে কিন্তু লিখতে শিখেছে আজ থেকে ৫/৬ হাজার বৎসর পুর্ব থেকে। এর রূপ চর্চা করতে-করতে আজকের পৃথিবীতে ভাষা এত শোভাবর্ধন করছে কিন্তু পৃথিবীর সব ভাষাই নয়।অনেক ভাষাই পৃথিবী থেকে বিলুপ্তও হয়েছে আাবার নতুন-নতুন ভাষারও জন্ম হচ্ছে।

No comments:

Post a Comment

লেখা পড়ুন এবং মতামত জানান ।