Sunday, October 16

প্রিয়ব্রত রায়

ছিন্নমূল

গোপালের আঙিনায়
রহিমের সীমানায়
লাউগাছ একটা
পুঁতেছিল মাগ্ টা
আঁকশিতে পেঁচিয়ে
উঠছিল উঁচিয়ে
ভাবছিল শীতকালে
পৌঁছবে কার চালে
পড়শির ঝগরায়
লাউগাছ বিগরায়
টানপড়ে শিকড়ে
পড়ে গেল ফাঁপড়ে
উঠছিল লতিয়ে
হেলেপড়ে নেতিয়ে
ছিন্নমূল লাউগাছ
বোঝেনাতো মারপ্যাঁচ
কে মুসলিম কে হিন্দু
ছেড়ে গেল ভবসিন্ধু

মানস চক্রবর্ত্তী

এই ফ্রি সটাইল এই বাটারফ্লাই


এভাবে নেমে গ্যালো একটা পথ 
বৃষ্টিতে ছাতা মাথায়
একটা একা পাখি উড়ে গ্যালো 
উঠোনের শিউলি ডাল ছেড়ে অনির্দেশের দিকে
একটা উজ্জ্বল শাড়ির আঁচল উড়ে  
চিল্কায় গিয়ে কিকরে যে মাস্তুল হয়ে গ্যালো

এত মোটাসোটা গীতাঞ্জলীর অক্ষর ঝ'রে বৈধব্যের নোটবই এখন

কেবল  আমরা সাঁতার শিখছি রোজ
এই ফ্রি স্টাইল তো এই বাটারফ্লাই
এদিকে জল নেই নদীতে এক আঁচলাও
খেয়াল নেই কারও 



Saturday, October 15

অমল ভট্টাচার্য্য

 ওরাই দুর্গা


শরতে মাঠে কাশফুল হাসে,
আমার দুর্গার কোলে ছোট্ট শিশু আঙুল চোষে।

শরতের পূর্ণিমায় রাতের
 আকাশে জ্যোৎস্নার খনি
আমার দুর্গা চক্ হাতে
 ক্লাশের ঐ দিদিমনি।

শরতের সকালে শিশির ভেজা মেদিনী, 
আমার দুর্গা থালা হাতে পথের ভিখারিণী।

শরতের আকাশে সাদা মেঘের ভেলা,
আমার দুর্গা কচি কচি পায়ে নৃত্যরতা বেলা।

পুজো পুজো গন্ধ শরতের সবুজ বনে,
আমার দুর্গা চাষের জমিতে ধান বোনে।

প্রসাদের থালায় বসে শরতের অলি,
আমার দুর্গা হচ্ছে পণের বলি।

শরতের উৎসবে গরিব কিংবা ধনী 
 একটু ভালোমন্দ খায়,
আমার দুর্গারা ল্যাম্প পোস্টের 
খোলা তারে 
তড়িদাহত হয়ে মারা যায়। 

শরতের নানা রূপ, ভরা নানা গন্ধে,
আমার দুর্গা আছে সমাজে
 নানা রূপে নানা সুগন্ধে।

খৈয়াম কাদের ( বাংলাদেশ )

ধানের পরাগ


অবশেষে অভিধান বদলেই গেলো 
জলের কুমিরগুলো অধিকারে নিয়ে নিলো
বন-বনানীর ছায়া, পাখিরা উদ্বাস্তু হলো 
অচেনা কচ্ছপ খেল আকাশের নীল
ও মেঘের মায়া। 

কে যেনো খসিয়ে নিলো বাতাসের অক্সিজেন
ও রোদের ক্লোরোফিল আর নদীময় নারীর সোহাগ 
ফিরে এলো প্রাচীন মগেরা ফের অনার্য শস্যের মাঠে 
খরার কবলে পড়ে বেধড়ক পুড়ে গেলো 
কুলিন কন্যার ধানের পরাগ।

তুহিন কুমার চন্দ

বৃষ্টি নামার আগে


বৃষ্টি নামার আগে তুমি হেঁটে গেছো বকুলের বনে,
বৃষ্টি নামার আগে হাড়ভাঙা গাছের শিকড়ে রেখেছিলে অমল বিশ্বাস।

নিঃশ্বাস নিতে নিতে চলে গেছে প্রসন্ন কারিগর, 
পুতুল নাচিয়ে কোনভাবে সংসার চালিয়ে গেছে সে।

বৃষ্টি নামার আগে সব ঋণ শোধবোধ পৃথিবীর কাছে,
যে লোকটা আঙ্গুলে সূতো বেঁধে পুতুল
নাচিয়ে গেছে শুধু, 
তার পাশে নিথর পরে আছে পুতুলের শব। 

বৃষ্টি নামার আগে তুমি হেঁটে গেছো সূর্যাস্তের দিকে,
সূর্য দেখোনি তুমি,
বকুলের গন্ধে নিশিরাত বুকের ভেতরে চেপে, 
শুনেছিলে অন্ধ বালিহাঁসের বিভৎস  চিৎকার।

বৃষ্টি নামার আগে এলোচুলে জ্যোৎস্না নেমেছিলো বকুলের ডালে,
তুমি একা একা কেন মিছে খুঁজে ফেরো অমল বিশ্বাস ।

রাজকুমার জাজোদিয়া

বঙ্গে বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ

গঙ্গা দ্বারা সৃষ্ট বদ্বীপের আয়তন প্রায় ১,৫০,০০০ বর্গ কিলোমিটার।এই বদ্বীপ সৃষ্টি হতে সময় লেগেছে প্রায় ৭০লক্ষ বছর।এই সৃষ্টি প্রক্রিয়া এখনো চলছে। এই বদ্বীপের প্রাচীন নাম বঙ্গ বা গঙ্গাহৃদ (গঙ্গাহৃদয়:গঙ্গার হৃদয় মনে করা হত)। বলা বাহুল্য, বর্তমানে এই বদ্বীপ বাংলাদেশ ও ভারতের (পশ্চিমবঙ্গ) মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে।এই বদ্বীপের আকৃতি বাংলা 'ব' অক্ষরের মতো, তাই নাম বদ্বীপ।এই বদ্বীপের তিনটি রেখা বা ভুজ এবং তিনটি বিন্দু রয়েছে। বিন্দুগুলো মানচিত্রে দেখা যাক। উত্তরে মুর্শিদাবাদ জেলায় মিঠিপুর গ্রামে গঙ্গা দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত ধারার নাম ভাগীরথী। পূর্বদিকে প্রবাহিত ধারার নাম পদ্মা। উল্লেখ্য, ভাগীরথীর দক্ষিণ প্রান্ত সাগরদ্বীপ (গঙ্গাসাগর) থেকে শুরু করে পূর্বদিকে এগোতে এগোতে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশের ভোলা জেলার নিঝুম দ্বীপে। 
উল্লেখ্য,এখানে প্রথম বিন্দু হচ্ছে মিঠিপুর, দ্বিতীয় বিন্দু হচ্ছে সাগর দ্বীপ এবং তৃতীয় বিন্দু হচ্ছে নিঝুম দ্বীপ।এই তিনটি বিন্দু যোগ করলে 'ব'  আকৃতির বদ্বীপ সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে।এটিই হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ।বদ্বীপের দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। এই বদ্বীপের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা।এই বদ্বীপের দক্ষিণাংশে রয়েছে বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বাসভূমি সুন্দরবন।