Sunday, December 4

ইতিহাস হয় সময়

দেবব্রত সরকার

শ্রদ্ধা করতে মন চায় মন চায় শ্রদ্ধা করতেই 
আপনার জন্য গাল পেতে আহ্বান করি আর্শীবাদ
আপনার জন্য কলম তুলেদিই ইসাকপনের টেক্কা 
তাসের ঘর কে সাজিয়ে তুলে জীবন্ত সংসারঘর
সময় এখন ইতিহাস ইতিহাস এখন পঞ্চাশ গড় আয়ু ভারতীয়র মতই 
তারপর! তারপর কোন এক নতুন যুদ্ধ সময় বাঁচানোর
প্রেম করে সহবাস করা  যার সাথে সেও কতটা পথ হাঁটে দেখবে সময় 
অপেক্ষার দূরত্ব এঁকে রোজনামচায় ঘর সাজিয়েছে আমার প্রেমিকা
তাকে বেশ লাগছে আমার সুখের কান্নায় এটা মেয়েরাই পারে ! পারে মেয়েরাই !
যখন কলম রেখে মানুষ হই তখন ভাবি মেয়েরা আসল হীরের মর্যদায় বোঝেনা 
কারণ ওই হীরেটা যমকালো কয়লার ভেতর দীর্ঘ সময় ধরে থেকে উজ্জ্বলতা ঢেকে রাখে
ঢেকে রাখা সময়, কখন গড় আয়ুতে হেঁটে যায় চশমার কাঁচ মুছে ভুল স্বীকার করে খমা চায় আদুরে হৃদয়া 
আর চিত্রগুপ্ত পৃষ্ঠা উল্টোয় যমরাজের করা নির্দেশে শাস্তির প্রোহর গুনে ইতিহাস হয় সময়
যে সময়ের গল্প শুনে ইতিহাস হয়না ইতিহাস গেঁথে রাখে তাকে শ্রদ্ধা করে গাল পেতে আহ্বান করি আর্শীবাদের !
                                   ---------

দোষ

সায়ন ব্যানার্জী

তোমার ব্যালকোনির পরন্ত রোদে
তুমি স্নান করছো দাড়িয়ে, রোজের মত
কোন এক বৃষ্টির দিনের কথা ভেবে,
তোমার মন উদাসীন
আমি সবই বুঝি, সেই বৃষ্টির কাছে
আমারও অনেক কৈফিয়ত চাওয়ার বাকি
তবু যখন তোমার চোখের একফোটা অশ্রুবিন্দু
দিনের শেষ রোদের ছোঁয়ায়, একচিলতে স্বর্ণকনায় পরিণত হয়
তবু যখন তোমার নরম দুই হাত, ব্যালকোনির লোহার রেলিং
আঁকরে ধরে শক্ত করে
তখন ভাবি, দোষ কার ছিল,
বৃষ্টির? বয়সের? না চাহিদার?......।।

রাশের মাজীর গুচ্ছকবিতা

গোপন কথা

শূন্য দেওয়াল কথা বলে, একাকী
গভীর রাত্রে
কার সহে, জানে না কেহ
কেবল ঘড়ি
টিকটিক করে আপন মনে চলতে চলতে
শুনে সে কথা

কল্পনা

-------------------
চোখের পলক যায়না ফেলা
তোমার রুপের ছটা দেখে
দাঁড়িয়ে আছ একলা তুমি
ওই নদীর পাড়ে বকুলের ধারে
আমিও কি থাকতে পারি
দাঁড়িয়ে তোমার পাশে
দিনের শেষে অস্ত নামে
গোধূলি বেলার দিগন্তে
মেরু আলো মিশছে ওই
নদীর পাড়ে বালির চড়ে
সেইখানেতে দাঁড়িয়ে তুমি
দেখছ চেয়ে নদীর পাড়ে
বক পাখির মাছধরা কৌশল
সোনালি বালির ওপর মিশেছে
বকের দুধ-সাদা পালকের সারি
আমি চেয়ে দেখে মুগ্ধ হলাম
সোনালি বিকেলের আলোকিত রুপ

মনেড়ে

মনে পড়ে সেই পুরানো দিন,
যেখানে তুমি আমি, আর আমি তুমি
করেছি কতই না আমোদ, ঘুরে হেতা সেথা।।
আজ শূন্য বুকে,ভাবছি তোমায়,
কত সহজেই ভুলে গিয়েছ আমায়।।
তবে কি ছিল সেগুল! ছলনা?
ভরা নদীর ভরা আনন্দ
আজ,শূন্য নদীর চোরা বালিতে-
জ্যোৎস্নার আলো মুখ ফিরিয়া লয়।
আমি একলা বসে ভাবছি তোমায়...
আসবে আবার কবে, জোয়ারের সাথে।।

সাজিয়ে নাও স্বপ্নকে

অমল ভট্টাচার্য্য
--------------------------------

আজকাল স্বপ্নের রঙগুলো ফ্যাকাসে হয়ে গেছে ,
স্বপ্নেরা হয়েছে স্যাঁতসেঁতে  আবৃত জালে ,
ওদের আজকাল পারিনা উপলব্ধি করতে,
মনে হয় স্বপ্নেরা যেন পচে গেছে ,
স্বপ্নগুলো প্রতিরাতে ছড়ায় গন্ধ স্যাঁতসেঁতে !

আগে স্বপ্নে পেতাম মাটির সোঁদা গন্ধ ,
আজ সে সব অজানা গন্ধ হয়েছে বন্ধ !
স্বপ্ন ভরে থাকে বেকারের হাহাকারে,
স্বপ্ন ভরে থাকে ক্ষুধার্ত শিশুর চিতকারে,
স্বপ্ন ভরে থাকে অনাথের আর্তনাদে,
স্বপ্ন ভরে থাকে ধর্ষিতার কান্নাতে,
স্বপ্ন ভরে থাকে নববধূর চিতার গন্ধে,
আমার স্বপ্ন ভরে থাকে অপবিত্র আঁশটে গন্ধে  !

আমার বয়স হয়েছে,
স্বপ্ন দেখার সময় শেষের পথে !
যারা থাকবে সুন্দর এ পৃথিবীতে,
সাজিয়ে নিক স্বপ্নগুলোকে দেখার মতো করে !

প্রেমিকার নাভিতে ভ্রূণ

মীরাজ হোসেন

.
প্রেমিকার নাভিতে ভ্রুণ
চমকে উঠি
তিলতিল করে বেড়ে ওঠে অাতংক।
.
জোর করে প্রেমিকা
পালাই নিরুদ্দেশ
বিবেকের মথিগলি ঘুরে
অাবার ঘরে ফিরে
প্রেমিকার নাভির ঘ্রাণ শুকি।
.
দূরে কেন?
কাছে এসো প্রিয়মুখ
ক্যামেরায় ছবি তৃলি
অার যে চিত্র রিলিজ হবে
তার রিল রঙিন সুতোয় বুনি ।

রাজ-সত্যের লীলা

- অবার্চীন

শোনো মহারাজ, এই বুঝি কাজ!
এই বুঝি সুশাসন?
অলিতে, গলিতে, বেদীতে, গদিতে
বাদর আস্ফালন!
শোনো মহারাজ, দোষ তব নয়-
মূর্খ প্রজার ভুল,
উল্লুক জনে দেবকূল মেনে
সঁপেছে অর্ঘ্য ফুল।
কুকুরের লেজে ঘন্টা বাধিঁয়া
পুরোহিত কর তারে,
মসজিদ ভার দিলে বেসুমার
কাঠ-মোল্লার ঘাড়ে।
মন্ত্র সাধিয়া আয়াতে বাঁধিয়া
অবোধেরে শুষে খায়,
অনুসারী যত, তোমাদেরি মত
বাকিটুকু লুটে যায়।
আহা মহারাজ বুলি তোমাদের
সর্ব মিষ্ট মধু,
প্রজাহিত কর কেঁদে কেঁদে মর
স্বার্থান্বেষী সাধু!
এই ধারে মারো, দোষ ওই ঘাড়ে
মরে তোদের কেউ?
মরিলে কেহ বা, আবদার উঠে
রাজার পুত্র সেও!
মারো পথে ঘাটে মারো ঘরে হাটে
সন্ত্বান তব নয়,
তবু বলি রাজা, মানুষ সে জন,
পিতা আছে নিশ্চয়!
জেনেছো কি কভু, ও মাটির প্রভু
এ লাশের পরিচয়,
তার আশে যে বা ঘরে বসে, তার-
প্রাণে না  যাতন সয়।
প্রজার লহুতে যেই রাজটিকা
লয়েছো ললাটে ভরি,
তার ঋণ শোধ হবে আলবত
আপন লহুতে তোরি।
গণ-আদালতে সস্তা কালিতে
লিখে দিলাম এই রায়,
কাঠগড়ে তুমি, প্রজার আসামী
দেখি কে তা খন্ডায়!
আমারে শুধাও? কি নাম আমার?
কি আমার পরিচয়?
কি জাত, কি পেশা, কোথা বাড়ি ঘর,
মনে বুঝি সংশয়?
এই রাজ্যেই জন্ম আমার
নাম আলী শংকর,
পেশা কবি কহি, জাতে বিদ্রোহী
বঙ্গে আমার ঘর।