Friday, September 16

দুঃখ পেলেই মরে যেতে হবে না

আনিসুর রহমান


তোমার কী খুব দুঃখ?

না ?

তবে কাঁদছো কেনো  ? যেন পৃথিবীর সব তারা  নিভে গেছে ,

তবে জীবনকে কেনো ঝুলাতে গিয়েছিলেঅতৃপ্তির যুপকাষ্ঠে?

যদি দুঃখ পেয়ে থাকো, ধারণ করো, সমুদ্র যেমন ধারণ করে বিক্ষুদ্ধ, বিষাদ জলরাশিকে।

দুঃখ পেলেই মরে যেতে হবে না,

যদি তা না হতো তবে কবেই ঘটাতাম জীবনের নির্মম পরিসমাপ্তি।

তুচ্ছ হয়ে বেঁচে থেকে, হৃদয়ে রক্তক্ষরনে বুঝেছি কতটা বেঁচে নেই।

কতবার মরে গেছি স্বপ্নে, আকাশ থেকে ঝরে পড়ে, আতংকে জেগে উঠেছি

বাঁচার আনন্দে, চিৎকারে, আন্দোলিত হয়ে, তেমনি তুমিও বাঁচবে, তোমাকে বাঁচতেই হবে।

একটি সূর্য নিভে গেলে, লক্ষ তারা জ্বলে ওঠে

তেমনি তোমাকেও জ্বলে উঠতে হবে, নিভে যেতে হবেনা।

 

নক্ষত্রের সন্তানেরা,

হতাশায় মরে যেওনা, কাঊকে মরে যেতে দিওনা

দুঃখ পেওনা, কাউকে দুঃখ দিওনা, বিদীর্ন হয়োনা, দুঃখকেই বিদীর্ন করো,

শোকে ডুবে যেওনা, ভেসে ওঠো আনন্দের শিহরনে জীবনের অন্যকুলে অন্য জনমে।

সময়ের চোরাবালিতে স্বপ্ন হারিয়ে গেলে, তবুও কাঁদতে হবে না,

পাতার শিশিরের মতো ঝরে যেতে হবে না।

খুঁড়িয়ে চলা জীবনকেও মাঝপথে থামাতে হবেনা। 

 

আমি বিশ্বাস করি,

আত্মগ্লানিতে জর্জরিত হয়ে তবু এগিয়ে চলা জীবনের গর্বিত মহাকাব্য রচনা করে।  

আত্মসম্মানবোধ জীবনের শ্রেষ্ঠত্বের সামনে নতমুখে হেঁটে যায়। 

রাত্রি যেমন দিনের উজ্জলতার কাছে হেরে যায়, তবু নিজের কাছে কেউ পরাজিত নয়।

বিশ্বাস করি,

মানুষ বাঁচবে সম্ভাবনার সূর্যকে স্পর্শ করার সাহস নিয়ে,

হৃদকম্পে জীর্ন ভবনের মতো ধ্বসে যেতে হবে না।

বেঁচে থাকতে হবে একটি সত্য সূর্যমুখীর মতো।

জীবনের কাছে হার মেনে, আঁচলে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে হবেনা ।

 

পৃথিবীর পাপী ও নিষ্পাপ সন্তানেরা,

প্রতিশোধে বিষাক্ত প্রেম ছুঁড়ে ফেলে দাও,

দান করো উম্মুক্ত ভালোবাসা চন্দ্রালোকের মতো, নিঃস্বার্থ, প্রতিদানহীন ।

কি দিয়ে কি পেলাম এমন তো নয়…..

প্রকৃত প্রেমিক কি কখনো খুজেঁ পায় তার প্রেমিকাকে ?

তবে  কেন সবুজ জোত্স্নার স্বপ্নে বিভোর অরণ্য রোদনে ?

প্রেম কি কখনো মুখরিত মিছিলের স্লোগানে ?

পুঞ্জিভূত ক্ষোভ কেরোসিনের আগুনে পুড়িয়ে নিজেকে দগ্ধ করে

বিবর্ণ আত্মা কি মুক্তি পায় ?

 

 

অবিনশ্বর প্রেমকে সন্ধিপত্রে বন্দী করনা।

আইনের বেড়াজালে মুর্খ জনপদ বন্দী করে ভালোবাসার শ্বেতকপোত।  

সন্ধিবিচ্ছেদ হলে হোক, জ্বলেপুড়ে নিঃশেষ হতে হবে না।

পরিনয়সূত্রে আবদ্ধ হতে না পারলেও জীবনের সাথে বিচ্ছেদ ঘটাতে হবেনা।

প্রেমে পুড়ে এসিডে ঝলসাতে হবেনা সৌকর্যের প্রতিমা।

বেদনার বিষবাস্প দুর্দমনীয় হলে হোক,নিজেকে বিস্ফোরিত হতে হবেনা।

বরং প্রশান্ত হও বৈকাল হ্রদের স্বছ জলের মতো, এবং ক্ষমা করো পাপীকে।

যে তোমাকে পথে ফেলে গেছে, তাকে পদদলিত করে শুরু হোক এক উচ্ছসিত নবযাত্রা। 

 

অসম্ভবের দিনগুলোতে স্নিগ্ধ স্বর্নালী এক ভোরে

জঠর পেরিয়ে জণ্ম নেবে এক চিলতে শিশু...

যেন সবুজ পাতায় ঝুলে থাকা কিঞ্চিত রৌদ্রালোক.

বেঁচে থাকবে নতুন প্রজন্মে, সন্তানের নতুন স্বপ্নের নীলিমায়,

প্রিয় সন্তানকে স্নেহের আলিঙ্গন থেকে বঞ্চিত করতে হবেনা। 

 

ক্ষণজন্মা এই জীবনে, তাই বঞ্চিত করো না, কষ্ট দিওনা,

নিস্পাপকে নষ্ট করোনা, স্বেচ্ছামৃত্যুকেমেনে নিও না,

এ পাপের ক্ষমা পাবে না, কখনো পাবে না।

তাই বাঁচতেই হবে, মৃতস্রোত কিংবা কীটপতঙ্গের মতো হলেও,

নিজেকে বিশ্বাস করো, তুমি অদ্বিতীয়,তোমাকে পারতেই হবে, আত্মহনন করতে হবেনা।

সমস্যাসংকুল জীবনের সমাধান মৃত্যুতে খুঁজতে হবেনা....

তাই আজ থেকে - দুঃখ পেলেই মরে যেতে হবেনা,

পৃথিবী তোমাকে চায়, পৃথিবীকে ছেড়ে যেতে হবেনা ।

 

Thursday, September 15

কিডনি নষ্ট থেকে বাঁচুন

ফেসবুক থেকে সংগ্রহ

ফেসবুক সংগ্রহ

আগমনি

মাসুম খান

মহামায়া মহাকালী
আদ্যাশক্তি মুখে বলি
জয় মা তোমার, জয় হোক
এবার, মহিষাসুর পদতলে।।

মা, পরমপুরুষ সঙ্গী তোমার
তুমি পরম প্রকৃতি
পরম সৃষ্টির কারণ তুমি
তুমি ধ্বংসধারিনী।।

মেনকা গর্ভজাত তুমি
মেনকারও জননী
গিরিধারীর কন্যাতুমি
তারও গর্ভধারিনী।।

সিংহ পিঠে সিংহাসনী
হিংস্র তুমি, হিংসানাশিনী
আমার ’পরে করূণা তোমার
ভক্তি লহ চরণ তলে।।

অসীম শক্তি তোমার মাঝে
ব্রহ্মা-বিষ্ণু লুটায় পদে
রাজ্যহারা হয়ে ইন্দ্র
তোমার স্মরণ লয় সে এসে।।

হিমালয়ের শিখর দেশে
পার্বতী নাম লয়ে হেসে
সুখে আসো আপন বেশে
কালকেটে যায় কালের দোষে।।

ইন্দ্র আবার রাজ্যহারা
ঘুরে পথে পাগল বেশে
টুটি টিপে ধরেছে মাগো
প্রাণ চলে যায় শক্তিনাশে।।

মাগো, শূম্ভনিশূম্ব আর মধুকৈটভ
এসেছে আবার ধরার মাঝে
মহিষাসুর তাদের মাঝে
ঐ দেখা যায় দেখনা চেয়ে।।

তুই যদি মা এমনি করে
কাটাস সুখে গিরিপরে
ডাকবো না আর মা মা বলে
মরবো দেখিস অসুরশক্তির পায়ের তলে।।

গুচ্ছকবিতা

"সন্যাসিনী"
রায়হান মুশফিক
※※※※※※※※※※※

যার কথা বলছি তিনি কোন কর্পোরেট সন্যাসিনী নন
সম্মোহনের জালে জড়াতে পারেন যে কাউকে;
যখন তখন।
প্রাকৃতিক ভাবেই সম্মোহনী শক্তির অধিকারিণী,
নিজের অজান্তে।
আমি তাঁর মায়াজালের শিকার;
শিষ্য বললেও ভুল হবে না।
আমি সম্মোহিত হয়েছি তাঁর কথায়, বুদ্ধির তীক্ষ্ণতায়।
স্বর্গীয় গান, তাঁর হাসিতে
ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়।
তাঁর মায়ায়, ইশারায়, না বলা অনেক কথায়-
সর্বোপরি তাঁর সমস্ত সত্তায়।
কখনো ভাল সে বাসেনি আমায়
শিষ্যকে ভালবাসা বেমানান;
যদিও বিপরীত ব্যাপারটা স্বাভাবিক।
তবু যেন কত
অনুভব করি!
যেমন সে বোঝে-
তাঁরে কত ভালবাসি।
তাঁর আছে সমুদ্রপাড়ের অবারিত প্রন্তর-
অাছে চোরাবালি,
হাঁটতে থাকি সম্মোহনে
চোরাবালিতে পড়েছি;
যতই দিন যায় আমি তলাতে থাকি।
কার বা সাধ্যি আছে বের হয়ে আসে,
উনি যে প্রকৃতির সন্যাসিনী।

"লাশ"

※※※※※※※※※※

এই যে ভিতরে আসুন!
গন্ধটা খুবই পরিচিত; কর্পূরের।
আগরবাতি জ্বলছে
ঘরের ভিতরটা মায়াময় আবহাওয়া;
ভয়ের কিছু নেই
সাদা কাফনে মোড়া উনি একজন মানুষ।
এখন অবশ্য ওনাকে মানুষ বললে অনেকে বুঝবে না;
লাশ ই বুঝি এখন সবচেয়ে ভালো পরিচয়।
দুদিন আগেও মানুষ হিসেবে সম্মানের ভার ছিল;
এখন তাঁর বাড়ি 'মরা বাড়ি'
আর তিনি শব।
আত্মার অনুপস্থিতিই সব?
লাশ আর মানুষ;
পার্থক্যে থাকে না কারো কাজ, জীবনাচরণ, বিগতদিন।
একি! আপনি কি কর্পূরের গন্ধে সম্মোহিত?
আগরবাতির ধোঁয়া শরীরের রন্ধ্রে ঢুকেছে;
ব্যাপনে?
সাদা কাপড়ের মাঝে নিজেকে লাশ মনে হচ্ছে?
ফিরে আসুন;
খুব বেশি সময় নেই।
লাশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাফন করা ভালো।

"অস্বিত্বে তুমি"

※※※※※※※※※

কবিতায় আর কি লিখব,
যখন সারাটা কবিতা জুড়ে তোমার অস্তিত্ব!
তোমার অস্বিত্বের সাদা প্রস্তর ভরে উঠে
আমার বলপয়েন্টের কালো নিবে,
তুমি হয়ে ওঠো আমার কবিতা!

আমার অস্তিত্বও মিশিয়ে দেই কবিতার অক্ষরের সহজ প্যাঁচে
কত দুর্বোধ্য শব্দ তরল হয়ে ওঠে;
অস্বিত্বে অস্বিত্বে বিলীন হয়
কালি হয়ে হারিয়ে যাই দু'জনেই,
কবিতা হয়ে যায় আমাদের সর্বস্ব
কি সৌখিন সহজ ভাবে তুমি কবিতা গেল!

লিখে যাই
যতক্ষণ শেষ কলমের নিব বুঝতে পারে;
সেও সাদা হতে চলেছে কাগজের মত।

প্রেরণা দত্তের আঁকা ছবি