Thursday, September 15

গুচ্ছকবিতা

"সন্যাসিনী"
রায়হান মুশফিক
※※※※※※※※※※※

যার কথা বলছি তিনি কোন কর্পোরেট সন্যাসিনী নন
সম্মোহনের জালে জড়াতে পারেন যে কাউকে;
যখন তখন।
প্রাকৃতিক ভাবেই সম্মোহনী শক্তির অধিকারিণী,
নিজের অজান্তে।
আমি তাঁর মায়াজালের শিকার;
শিষ্য বললেও ভুল হবে না।
আমি সম্মোহিত হয়েছি তাঁর কথায়, বুদ্ধির তীক্ষ্ণতায়।
স্বর্গীয় গান, তাঁর হাসিতে
ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়।
তাঁর মায়ায়, ইশারায়, না বলা অনেক কথায়-
সর্বোপরি তাঁর সমস্ত সত্তায়।
কখনো ভাল সে বাসেনি আমায়
শিষ্যকে ভালবাসা বেমানান;
যদিও বিপরীত ব্যাপারটা স্বাভাবিক।
তবু যেন কত
অনুভব করি!
যেমন সে বোঝে-
তাঁরে কত ভালবাসি।
তাঁর আছে সমুদ্রপাড়ের অবারিত প্রন্তর-
অাছে চোরাবালি,
হাঁটতে থাকি সম্মোহনে
চোরাবালিতে পড়েছি;
যতই দিন যায় আমি তলাতে থাকি।
কার বা সাধ্যি আছে বের হয়ে আসে,
উনি যে প্রকৃতির সন্যাসিনী।

"লাশ"

※※※※※※※※※※

এই যে ভিতরে আসুন!
গন্ধটা খুবই পরিচিত; কর্পূরের।
আগরবাতি জ্বলছে
ঘরের ভিতরটা মায়াময় আবহাওয়া;
ভয়ের কিছু নেই
সাদা কাফনে মোড়া উনি একজন মানুষ।
এখন অবশ্য ওনাকে মানুষ বললে অনেকে বুঝবে না;
লাশ ই বুঝি এখন সবচেয়ে ভালো পরিচয়।
দুদিন আগেও মানুষ হিসেবে সম্মানের ভার ছিল;
এখন তাঁর বাড়ি 'মরা বাড়ি'
আর তিনি শব।
আত্মার অনুপস্থিতিই সব?
লাশ আর মানুষ;
পার্থক্যে থাকে না কারো কাজ, জীবনাচরণ, বিগতদিন।
একি! আপনি কি কর্পূরের গন্ধে সম্মোহিত?
আগরবাতির ধোঁয়া শরীরের রন্ধ্রে ঢুকেছে;
ব্যাপনে?
সাদা কাপড়ের মাঝে নিজেকে লাশ মনে হচ্ছে?
ফিরে আসুন;
খুব বেশি সময় নেই।
লাশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাফন করা ভালো।

"অস্বিত্বে তুমি"

※※※※※※※※※

কবিতায় আর কি লিখব,
যখন সারাটা কবিতা জুড়ে তোমার অস্তিত্ব!
তোমার অস্বিত্বের সাদা প্রস্তর ভরে উঠে
আমার বলপয়েন্টের কালো নিবে,
তুমি হয়ে ওঠো আমার কবিতা!

আমার অস্তিত্বও মিশিয়ে দেই কবিতার অক্ষরের সহজ প্যাঁচে
কত দুর্বোধ্য শব্দ তরল হয়ে ওঠে;
অস্বিত্বে অস্বিত্বে বিলীন হয়
কালি হয়ে হারিয়ে যাই দু'জনেই,
কবিতা হয়ে যায় আমাদের সর্বস্ব
কি সৌখিন সহজ ভাবে তুমি কবিতা গেল!

লিখে যাই
যতক্ষণ শেষ কলমের নিব বুঝতে পারে;
সেও সাদা হতে চলেছে কাগজের মত।

প্রেরণা দত্তের আঁকা ছবি

ফুটপাতের পতঙ্গ

গোপেশ দে

শাঁ শাঁ গাড়ির শব্দে এলোমেলো মাথার
কার্যকলাপ।
শরীরের ভেতরে যন্ত্রণার অবগাহনে লোমকূপ দাঁড়াতে ভুলে না।
দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়ে থাকে....
ছুঁচোর ডন জঠরের মধ্যে।
জীবনের ম্যাজিক সময় ওদের হাতের তালুতে।
রাত নেমে তাঁরা আলো হয়ে মিটমিট জ্বলে,
চাঁদের ডিউটি চলে কবিদের সাথে,প্রেমিকের ন্যাকা কথা সেলফোন সঙ্গী হয়ে জোৎস্নার ডিএনএ মেখে ডিম্বাণু উত্তপ্ত করে চলে....
সব চলে।
হ্যান্ডিক্যাপড অসার দেহের সংসার বঞ্চিত
পতঙ্গের কান্নায় সাহস জোগানোর ডিউটি আসেনা।
ওখানেতে কাব্যচর্চায় জাগ্রত চাঁদ, উঠোন জুড়ে চাঁদের কবিতার রেশন ভাগ করে খায়
আয়েশী আবেগী টোনাটুনি কিংবা টম এন্ড জেরি
আর কিছু অন্যধরনের পতঙ্গের কংকাল ফুটপাতে ভেংচি কাটে,
বসে চাটে মাটি,
কুকুরের সাথে রুটি ভাগ।
জিহ্বায় রসনাবিদ্বেষী ক্ষিধে।
কাব্যচর্চা চলেনা এখানে
জীবনটাই তো নস্টালজিক মিছে আশা,ড্রিল মেশিনের ফুটো শরীরে।
অন্য এক জীবনের শরবত খায় তারা
ফুটপাতসঙ্গী পায়
জীবনমুখী শিল্পীরা গান গায়।
পুরুষাঙ্গ নিষ্পাপ তবু
আকাশের পানে চেয়ে থাকে।

মঙ্গল কাব্যের সামাজিক মূল্য





মাসুম খান

বাংলাদেশের গ্রামীণ জনজীবনের সঙ্গে মঙ্গলকাব্য উৎপত্ত ভাবে জড়িয়ে আছে। এই মঙ্গল কাব্যগুলি বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাসে ড. আশুতোষ ভট্টাচার্য

Sunday, August 21

ছবি তুুলোনা

অভিজিৎ দাস

ছবি তুলোনা, কারন
ছবিতে কিছুই রাখা যায়না ধরে । এই তুমি, তুমি শুধু এখনই আছো, ছিলেওনা,থাকবেওনা ।
তুমি ক্ষণস্থায়ী, ক্ষণ, কতক্ষণ?
--- সেকেন্ড, মিলিসেকেন্ড, কিংবা তার থেকেও কম ।

ছবি তুলোনা, কারন ট্রানজিষ্টারের খাঁজে খাঁজে জমে থাকা ছবি খোঁচা দেবে, ব্যথা দেবে, ব্যথা শুধু স্মৃতি নয় ।

Monday, August 15

স্বাধীনতা

সুরজিৎ সী

স্বাধীনতা কি খাবার জিনিস, ভুরিভোজ করে খাওয়া যায়।
নাকি সেটা কোনো বাদ্য যন্ত্র বাজিয়ে মজা পাওয়া যায়।
স্বাধীনতা কোনো গাছে ফোটা ফুল, টুক করে তুলে নিলে হয়।
নাকি সেটা কোনো বিষাক্ত সাপ, হাত দিতে গেলে লাগে ভয়।
স্বাধীনতা কোনো রেশমি পোষাক, সারাদিন পরে থাকা যায়।
নাকি সেটা কোনো শুঁয়োপোকা যা গায়ে লাগলেই চুলকায়।

স্বাধীন হয়েছে ভারতবর্ষ তিন কুড়ি সাল হল।
তবু পরাধীন ভারতবাসী পরাধীন'ই থেকে গেল।
কত না যুদ্ধ কত মারামারি কত প্রাণ হল নষ্ট।
ক্ষুদিরাম আর নেতাজি সুভাষ বৃথাই করেছে কষ্ট।
পিতা পরাধীন পুত্রের কাছে, সেও পরাধীন আরো কারে কাছে।
প্রকৃত অর্থে ভারতবাসী, পরাধীন ছিল পরাধীন আছে।
"স্বাধীনতা" শুধু শুনেই এসেছি, দু'চোখে দেখিনি কভু।
জীবনে কাউকে স্বাধীন দেখিনি, দেশটা স্বাধীন তবু।

প্রেমের আগুন

দুজন প্রেমির প্রেমের উষ্ণতায় আচমকা দুটি গ্রামে জ্বলে ওঠল আগুন!
কিছু জন সে আগুনকে উনুন বানিয়ে ভাতের হাঁড়ি চাপাল!
কিছু জন মনের সুখে আগুন পোয়ালো!
নেতারা এল উন্নয়ন যজ্ঞের প্রস্তুরি করতে!
পুরোহিতগণ এল সেই আগুন ঘী ঢালতে!
শুরু হল উন্নয়নের মহা যজ্ঞ!
কিছুজন এসেছিল জলের কলস নিয়ে,
কিন্তু তারা তো অসামাজিক, অধার্মিক,-
নাহলে যজ্ঞ স্থলে জলের কলস কেউ আনে!
ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের গলায় সেই কলস বেঁধে,
নদীতে ফেলে দেওয়া হল!
এখনও সেখানে আগুন স্ফটিকের মতো উজ্জ্বল!
না না,- সে আগুনে দেয়নি কেউ একটি ফোঁটা ও জল!
বরং শুদ্ধ দেশি ঘী আহুতি করা হয়েছে!
আহুতি গেছে বাবুদের নীতিজ্ঞান ও নিদর্শনের স্তুপ।
যজ্ঞ ফসলের অদম্য চেষ্টায় নিবিষ্ট পুরোহিত।
আহুতি আহত হয় নিষ্পাপ প্রাণ।